Monday, November 30, 2015

একরোখা শিশু সামলাবেন কীভাবে?


http://paimages.prothom-alo.com/contents/cache/images/400x0x1/uploads/media/2015/03/17/8e69bd22f5e7589dbd1b5303aa21e8cd-27.jpg

নয় বছরের তমালকে (ছদ্মনাম) নিয়ে তো প্রায়ই বিপদে পড়তে হয় ওর বাবা-মায়ের। শপিং মলে গেলে কোনো কিছু কেনা তার চাই-ই চাই। আর সেটা না কিনে দিলে মাটিতে গড়াগড়ি। সবার সামনেই চিৎকার, কান্নাকাটি—সে এক হুলুস্থুল অবস্থা। আদর দিয়ে, ধমক দিয়ে, বুঝিয়ে—নানাভাবেই চেষ্টা করে দেখেছেন, কোনোভাবেই তমালকে বোঝানো যায় না। ফলে চাহিদামতো জিনিস তাকে কিনে না দিয়ে কোনো উপায়ও থাকে না।
অপর দিকে ছয় বছরের ছোট্ট মিথিলা (ছদ্মনাম) খুব মিষ্টি হলেও খাওয়া, পড়া সবকিছুতেই তার জেদ ধরা চাই। একবার না বললে কোনোভাবেই যেন সেটা হ্যাঁ হবে না। মনোবিজ্ঞানে কিছু শিশুকে বলা হয় ‘সহজে মানানো যায় না এমন শিশু’ বা ‘ডিফিকাল্ট চাইল্ড’। ১০ শতাংশ শিশু এমন হয়ে থাকে। এ ধরনের বাচ্চারা অল্পতেই উত্তেজিত হয়। একরোখা হয়। সহজে কথা শোনে না বা সন্তুষ্ট হয় না। মনোবিজ্ঞানী চেস ও থমাসের মতে, ৪০ শতাংশ শিশুকে বলা হয় ‘সহজে মানানো যায় এমন শিশু’। যাদের খাওয়া, ঘুম, বাথরুম ইত্যাদি সবকিছুই একধরনের নিয়মের মধ্যে থাকে। এরা যেকোনো কথা সহজে শোনে। এ দুই ধরনের বৈশিষ্ট্যের মিশ্রণ থাকে বাকি ৫০ শতাংশ শিশুর মধ্যে।
একরোখা ভাব বা যেকোনো কিছু নিয়ে জেদ করা অনেক শিশুরই বিশেষ এক বৈশিষ্ট্য। কোনো কিছু চাইলে সেটা দিতেই হবে, যেকোনো কিছুতেই তারস্বরে চেঁচানো, জিনিসপত্র নষ্ট করা ইত্যাদি তাদের যেন জেদেরই বহিঃপ্রকাশ।সন্তানের জেদ প্রশ্রয় দেবেন না। মডেল: রিহাল ও শিখা, ছবি: কবির হোসেন
শিশুদের জেদ কেন হয়—এ প্রশ্নের উত্তরে বলা যায়, জন্মগতভাবে পাওয়া বৈশিষ্ট্য এবং চারপাশের পরিবেশের প্রভাবেই বিকশিত হতে থাকে শিশুর মনের গঠন। অর্থাৎ, তার সঙ্গে আমাদের আচরণ কেমন হচ্ছে, তার কোনো ব্যবহার বা আচরণ আমাদের মাধ্যমে অজান্তে উৎসাহ পাচ্ছে কি না, বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে তার মেলামেশা, চারপাশে সে কী দেখে বড় হচ্ছে ইত্যাদি নানা কিছুই প্রভাব ফেলে তার মনে। এরই প্রতিফলন দেখি শিশুর আচরণে।

মনোবিজ্ঞানের একটা নিয়ম হলো, সন্তানের যেসব আচরণে মা-বাবা মনোযোগ দেবেন, সেসব আচরণ সে বারবার করবে। এই মনোযোগ যেমন আমরা আদর বা প্রশংসা করা, দাবি পূরণ করার মাধ্যমে দিতে পারি, তেমনি ‘বকা দেওয়া’, ‘বোঝানো’র মাধ্যমেও হতে পারে। যেমন, কোনো বাচ্চা কোনো কিছু কেনার জন্য জেদ করলে তাকে সেটা কিনে দিলে তার জেদ করার প্রবণতা আরও বাড়বে।
আবার কেউ যদি কোলে ওঠার জন্য মাটিতে গড়াগড়ি দেয় আর কেউ তাকে কোলে তুলে নেয়, তাহলে তার গড়াগড়ি দেওয়ার মতো অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণটি মনোযোগ পাবে। পরে এ আচরণটি আরও বাড়বে। এমনকি শিশুদের দুষ্টুমি নিয়ে বা জেদ নিয়ে তাদের সামনে অন্যদের সঙ্গে গল্প করলেও শিশুর এসব আচরণে পরোক্ষভাবে উৎসাহ দেওয়া হয়।
তাহলে একরোখা শিশুদের সামলাতে কী করা উচিত? শিশু যখন জেদ করে সবার সামনে কান্নাকাটি করতে বা গড়াগড়ি দিতে থাকবে, তখন তার দাবি না মেটালে সামলাবেন কীভাবে? অথবা জেদ করে যখন না খেয়ে থাকবে, তখন তার ইচ্ছা পূরণ না করেই বা উপায় কী?
আচরণ যেমন মনোযোগ দিলে বাড়ে, আবার যেকোনো ব্যবহার, আচরণ যদি ক্রমাগত উপেক্ষা করা হয়, তাহলে সেসব আচরণ কিন্তু কমে যাবে।
সুতরাং শিশুর কোনো আচরণ পছন্দ না হলে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করুন। অর্থাৎ, বাচ্চা জেদ করলে তাকে বকা দেওয়া, বোঝানো, দাবি পূরণ করা, তাকে কটাক্ষ করা ইত্যাদি থেকে নিজেকে বিরত রাখুন এবং সম্পূর্ণ উপেক্ষা করুন। ধৈর্য ধরে দৃঢ়তার সঙ্গে ক্রমাগত যেকোনো জেদে এমন আচরণ করতে পারলে শিশু বুঝে যাবে যে জেদ করে কোনো কিছু আদায় করা যায় না। ছোটখাটো জেদকে প্রশ্রয় না দিয়ে এ অভ্যাসটি শুরু করুন ঘর থেকেই।
একটা জনপ্রিয় প্রশ্ন হলো, ক্ষেত্রবিশেষে শিশুরা যখন সীমা ছাড়িয়ে যায় (যেমন বেয়াদবি করা, জিনিসপত্র নষ্ট করা ইত্যাদি), তখন শাস্তি কতখানি গ্রহণযোগ্য? উত্তর হলো, ক্ষেত্রবিশেষে শাস্তি সাময়িকভাবে কার্যকর হলেও শিশু এ ক্ষেত্রে কোনো শিক্ষা গ্রহণ করে না। বরং বারবার শাস্তি দিলে শাস্তির গুরুত্ব কমে যায়। শিশুমনে একধরনের নেতিবাচক আবেগ তৈরি হয়।
সুতরাং শাস্তিযোগ্য কোনো কাজে শাস্তির পরিবর্তে সন্তানের কিছু সুবিধা (যেমন আদর করা, কথা বলা, প্রশংসা করা, উপহার দেওয়া) ইত্যাদি সাময়িকভাবে কমিয়ে ফেলুন।
কী করবেন?
* শিশুর যেকোনো ভালো কাজে প্রশংসা করুন।
* পড়ালেখার পাশাপাশি সাধারণ আচরণ, নিয়ম-কানুন শেখান।

* সামাজিক পরিবেশে কোন ধরনের আচরণ গ্রহণীয় এবং কোনগুলো গ্রহণযোগ্য নয়, সেটা স্পষ্ট করে জানান।
* সমবয়সী শিশুদের সঙ্গে মিশতে দিন। তার জিনিসপত্র শেয়ার করতে শেখান।
* যেকোনো জেদ সম্পূর্ণ উপেক্ষা করুন।

কী করবেন না?
* যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ সম্পূর্ণ উপেক্ষা করুন।
* জেদে অতিরিক্ত বোঝানো, বকা দেওয়া বা তিরস্কার করবেন না।
* জেদ নিয়ে বাচ্চার সামনে অন্যদের সঙ্গে গল্প করবেন না।
* জেদ করে কোনো কিছু চাইলে সেই দাবি পূরণ করবেন না। স্বাভাবিকভাবে চাইলে তখন দেবেন।

 সুত্র প্রথম আলো
মেখলা সরকার | আপডেট:
মেখলা সরকার : মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, সহকারী অধ্যাপক, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা

Saturday, October 31, 2015

পড়াশোনায় মনোযোগ বাড়ানোর উপায়


... নাজিয়া কাইয়ুম

আজকাল অনেকে পড়ার ফাঁকে একটু বিশ্রামের জন্য ফেসবুকে ঢোকেন বা গেম খেলেনযাতে সত্যিকার অর্থে বিশ্রাম হয় না। তার চেয়ে বরং কর্মক্ষমতা বাড়ায় সেরকম ছোট এক টুকরো ডার্ক চকলেট মুখে দিয়ে পছন্দের গান শুনতে পারেন। বন্ধুদের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলতে পারেন। এতে করে মাথাটা খালি তো হবেই এবং পড়াশোনায়ও মনোযোগ ফিরে আসবে।

না পড়লে পড়ে যেতে হয়। কিন্তু পড়ে যেতে কে চায় বলুনপ্রতিযোগীতার এই যুগে নিজেকে সেরাদের দলে টিকিয়ে রাখতে পড়াশুনার চাপ সইতে হয় অনেক। তবে নানা কারণে পড়াশোনায় মনোযোগ ধরে রাখা বেশ কঠিন। এই কঠিন কাজকে সহজ করা সম্ভব মস্তিষ্ককে সজাগ রাখতে পারলে। তাই শিখে নিতে পারেন কিছু সহজ উপায়-
মনোযোগ বাড়াতেপড়তে যখন একদমই ইচ্ছা করে নাতখন কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে পড়লে তা মনে রাখা সহজ হয়। টোসের একটি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ৩০০ ছাত্র-ছাত্রীকে নিয়ে করা এক সমীক্ষার ফলাফল থেকে এই তথ্য জানা গেছে। পরীক্ষায় দেখা যায়যারা বসে পড়াশোনা করেছিলো তাদের তুলনায় দাঁড়িয়ে পড়ুয়াদের মনোযোগ ছিল অনেক বেশি। তাছাড়া বন্ধুদের সঙ্গে পড়াশোনা নিয়ে আলোচনা করলেও বেশি মনে থাকে।
দায়িত্ববোধছোটবেলা থেকেই যারা অস্থির প্রকৃতিরপড়াশোনা বা অন্য কিছুতেও তেমন আগ্রহ নেই বা মন বসাতে পারেনা তাদের জন্য নিতে হবে বিশেষ ব্যবস্থা। এমন ছেলেমেয়েকে কোনো পোষা প্রাণি কিনে দেয়া যেতে পারে। ছোট ভাই-বোনের কিছুটা দেখাশোনার দায়িত্ব দেয়া যেতে পারে। এতে তারা কাজের প্রতি দায়িত্বশীল হয়ে উঠতে পারেআত্মবিশ্বাস বাড়তে পারে। কারণ আত্মবিশ্বাসই পড়াশোনায় মনোযোগ এনে দেবে।
পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার পড়ুয়া ছেলে-মেয়েদের দিতে হবে যথেষ্ট ভিটামিনমিনারেল এবং পানীয় অর্থাৎ স্বাস্থ্যসম্মত খাবার। প্রধান খাবারের ফাঁকে দেশি ফলদুধডিমমিনারেলআয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। মনোযোগ ঠিক রাখতে জার্মানির অনেক স্কুলের টিফিনে আপেল খেতে দেয়া হয়। তাই বাচ্চাদের প্রতিদিন দুয়েকটা করে আপেল খেতে দেয়া যেতে পারে।
মস্তিষ্কের খাবার নানা রকমের বাদামআখরোটসামুদ্রিক মাছশাক-সবজিফলগ্রিন-টিসহ বিভিন্ন চা। এসব খাবার শরীর এবং মস্তিষ্কের জন্য খুবই উপকারী। পড়াশোনার মাঝে পাকা টমেটো বা টমেটোর জুসও খাওয়া যেতে পারে। মাত্র ১০০ গ্রাম টমেটোতে পাবেন ২৫ গ্রাম ভিটামিন ‘সি’ এবং পটাশিয়াম। এসব উপাদান মস্তিষ্কের সঠিক গঠন নিশ্চিত করে।
ফাস্টফুডফাস্টফুডে থাকা নানা রকম রাসায়নিক উপাদান অনেকের জন্যই অ্যালার্জির কারণ হয়ে থাকে। এসব উপাদান মনোযোগ এবং শরীরে বিরূপ প্রভাব ফেলে। তাই আজকের তরুণদের কাছে এসব খাবার প্রিয় হলেও শরীর ও মস্তিষ্কের কথা ভেবে কিছুটা সাবধান হওয়া উচিৎ।
ব্রেনের বিশ্রামআজকাল অনেকে পড়ার ফাঁকে একটু বিশ্রামের জন্য ফেসবুকে ঢোকেন বা গেম খেলেনযাতে সত্যিকার অর্থে বিশ্রাম হয় না। তার চেয়ে বরং কর্মক্ষমতা বাড়ায় সেরকম ছোট এক টুকরো ডার্ক চকলেট মুখে দিয়ে পছন্দের গান শুনতে পারেন। বন্ধুদের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলতে পারেন। এতে করে মাথাটা খালি তো হবেই এবং পড়াশোনায়ও মনোযোগ ফিরে আসবে।
ব্যায়ামগবেষকরা মনে করেনশারীরিক পরিশ্রম অর্থাৎ খেলাধুলা বা ব্যায়াম মানসিক চাপ থেকে সহজে মুক্তি দিতে সাহায্য করে। ব্যায়াম বা খেলাধুলা করার ফলে শরীরে হরমোনের প্রকাশ ঘটে কিছুটা অন্যভাবে। আর স্বাভাবিকভাবেই তার সু-প্রভাব পড়ে মনোযোগে। পড়াশুনা করাও সহজ হবে। ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষেও ভালো ফলাফল করা সম্ভব হবে।
 

sutro ২৮ অক্টোবর বুধবার ২০১৫ খ্রিঃ

Saturday, September 12, 2015

দুষ্টু শিশুদের সামলাতে করনীয় ।

 http://paimages.prothom-alo.com/contents/cache/images/400x0x1/uploads/media/2014/04/11/534789b1274e8-SHOUTING-CHILDREN.jpg
শিশুর দুরন্তপনা বা দুষ্টুমি খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু কখনো কখনো এই দুরন্তপনা স্বাভাবিকের মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। বইপত্র, খেলনা, ঘরের জিনিস সব কিছু ভেঙে ফেলে কেউ কেউ। আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব বাড়িতে বেড়াতে এলে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে, আবার তাদের বাড়িতে গেলেও একই অবস্থা। শিশু মহলেও এই অতি দুরন্ত শিশুটি ত্রাসের সৃংষ্ট করে। অনেক বাবা-মা এই দুরন্তপনার ব্যাপারটি লক্ষ করতে চান না। তাদের কাছে এটা যেন শিশুর স্বাভাবিক ব্যবহারের অংশ। কিন্তু আসলে তা নয়। অতি দুরন্ত শিশু যখন স্কুলে যায়, তখন স্কুল থেকেও চিঠি আসে অভিভাবকের কাছে যে, তার সন্তান দুরন্ত, অমনোযোগী এবং অন্য শিশুদের এতে সমস্যা হচ্ছে।

এসব দুষ্টু শিশুদের সামলাতে হিমশিম খান বাবা-মায়েরা। অনেক শিশু আবার বাজে বকুকি শিখে ফেলে এবং এগুলো বলতেই থাকে। এ ধরনের অস্বস্তিকার সমস্যা থেকে বাঁচতে কৌশলি হতে হবে আপনাকে। ওদের এ ধরনের অভ্যাস থেকে বের করে আনাটা জরুরি। নয়তো এমন বাজে শৈশব কাটার পর একই ধরনের কৈশোর আসবে তাদের। পরের জীবনেও এর প্রভাব থেকে যাবে। তাই ওদের ছোটকাল থেকেই আপনার অভিভাবক হিসেবে সচেতন হওয়া প্রয়োজন।

বড়দের সঙ্গে ঝগড়া করা বা গালিগালাজ করার অভ্যাস শিশুদের গড়ে ওঠে। এই চর্চা আরো এগোতে থাকে যখন শিশুর এমন আচরণের বিপরীতে বাবা-মায়েরাও বাজে ভাষায় পাল্টা বকুনি দেন। শিশুরাও এভাবে বাবা-মাকে পাল্টা গালি দিতে শেখে।
 http://manchitronews.com/wp-content/uploads/2015/07/%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%B7%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A7%81-%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%81.jpg
আগের আমলে শিশুদের কড় শাসনে বড় করতেন বাবা-মায়েরা। আধুনিক অভিভাবকরা সন্তানদের বন্ধু হয়ে উঠতে চান। সন্তানদের প্রতি একটা ভয়ও কাজ করে পিতা-মাতার। তবে বহু আগে থেকেই শিশুর মধ্যে গালিগালাজ প্রবণতা কাজ করে। কড়া শাসনে থেকে রাগ পুষে না রাখতে পেরে আড়ালে গিয়ে বকাবকির অভ্যাস গড়ে ওঠে। আবার এখন বাবা-মা বন্ধুভাবাপন্ন হওয়ার কারণে হয়তো সাহস করে সামনেই বাজে কথা বলে ফেলে সন্তানরা। এমনকি এই অভ্যাস বাড়ি থেকে স্কুল পর্যন্ত চলে যায় এবং সবার সঙ্গে তার চর্চা চলতে থাকে।

আধুনিক বাবা-মায়েরা সবচেয়ে বেশি সমস্যা ভোগ করছেন। এমন কি বদলেছে যার কারণে এমন হচ্ছে? বাবা-মায়ের সঙ্গে সন্তানদের সম্পর্ক কি নষ্ট হচ্ছে? মূলত শিশুদের মাঝে কোনো পরিবর্তন আসেনি। তবে অভিভাবকত্বের মধ্যে বেশ বদল হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, আধুনিককালে এমন এক সময় এসেছে যখন সম্পর্কের অনেক দেওয়াল ভেঙে গেছে। বর্তমান যুগে সন্তান ও অভিভাবকের মাঝে এই টানাপড়েনে প্রতিযোগিতা করা অনেকটা পাগলামির মতো। কাজেই বড়দের পক্ষ থেকেই এভানে সাবধান হতে হবে এবং এতে গোটা বিষয়টি থেকে যাবে।

ঝামেলা বেধে গেলে সবচেয়ে কার্যকর উপায়টি হলো, পেছনে ফিরে যাওয়া। অর্থাৎ, কোন বিষয়টি যাবতীয় সমস্যার কারণ তা বাবা-মাকে খুঁজে দেখতে হবে। সন্তানের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডায় জড়িয়ে গেছে এবং সেখানে জোর খাটিয়ে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে গেলে বিপদ আরো বাড়বে। তাই এ ক্ষেত্রে আপনি পিছিয়ে যান।

অনেকেই অভিভাবকত্বের জন্যে পরামর্শকের কাছে যান। তারা এ ক্ষেত্রে ভালো পরামর্শ দিতে পারেন। পরামর্শগুলো উপলব্ধি করতে না পারলে আপনিও অভিভাবক হিসেবে নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারাবেন। এ ক্ষেত্রে সমস্যা আরো বেড়ে যাবে। শিশুদের বোঝাতে হবে। আদর-স্নেহ দিয়ে বোঝালে সহজেই বুঝতে পারে শিশুরা। আপনিও যদি ওদের সঙ্গে রাগ দেখাতে থাকেন, তাহলে আপনাকে প্রতিযোগী মনে করতে পারে ।
দুষ্টু শিশুদের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন?
দ্য বেঙ্গলি টাইমস ডটকম ডেস্ক
অ+ অ-প্রিন্ট
<a href='http://bdads.bd-ads.com/ads/www/delivery/ck.php?n=aef65122&cb=INSERT_RANDOM_NUMBER_HERE' target='_blank'><img src='http://bdads.bd-ads.com/ads/www/delivery/avw.php?zoneid=107&cb=INSERT_RANDOM_NUMBER_HERE&n=aef65122' border='0' alt='' /></a>
শিশুর দুরন্তপনা বা দুষ্টুমি খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু কখনো কখনো এই দুরন্তপনা স্বাভাবিকের মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। বইপত্র, খেলনা, ঘরের জিনিস সব কিছু ভেঙে ফেলে কেউ কেউ। আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব বাড়িতে বেড়াতে এলে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে, আবার তাদের বাড়িতে গেলেও একই অবস্থা। শিশু মহলেও এই অতি দুরন্ত শিশুটি ত্রাসের সৃংষ্ট করে। অনেক বাবা-মা এই দুরন্তপনার ব্যাপারটি লক্ষ করতে চান না। তাদের কাছে এটা যেন শিশুর স্বাভাবিক ব্যবহারের অংশ। কিন্তু আসলে তা নয়। অতি দুরন্ত শিশু যখন স্কুলে যায়, তখন স্কুল থেকেও চিঠি আসে অভিভাবকের কাছে যে, তার সন্তান দুরন্ত, অমনোযোগী এবং অন্য শিশুদের এতে সমস্যা হচ্ছে। 

এসব দুষ্টু শিশুদের সামলাতে হিমশিম খান বাবা-মায়েরা। অনেক শিশু আবার বাজে বকুকি শিখে ফেলে এবং এগুলো বলতেই থাকে। এ ধরনের অস্বস্তিকার সমস্যা থেকে বাঁচতে কৌশলি হতে হবে আপনাকে। ওদের এ ধরনের অভ্যাস থেকে বের করে আনাটা জরুরি। নয়তো এমন বাজে শৈশব কাটার পর একই ধরনের কৈশোর আসবে তাদের। পরের জীবনেও এর প্রভাব থেকে যাবে। তাই ওদের ছোটকাল থেকেই আপনার অভিভাবক হিসেবে সচেতন হওয়া প্রয়োজন।

বড়দের সঙ্গে ঝগড়া করা বা গালিগালাজ করার অভ্যাস শিশুদের গড়ে ওঠে। এই চর্চা আরো এগোতে থাকে যখন শিশুর এমন আচরণের বিপরীতে বাবা-মায়েরাও বাজে ভাষায় পাল্টা বকুনি দেন। শিশুরাও এভাবে বাবা-মাকে পাল্টা গালি দিতে শেখে।

আগের আমলে শিশুদের কড় শাসনে বড় করতেন বাবা-মায়েরা। আধুনিক অভিভাবকরা সন্তানদের বন্ধু হয়ে উঠতে চান। সন্তানদের প্রতি একটা ভয়ও কাজ করে পিতা-মাতার। তবে বহু আগে থেকেই শিশুর মধ্যে গালিগালাজ প্রবণতা কাজ করে। কড়া শাসনে থেকে রাগ পুষে না রাখতে পেরে আড়ালে গিয়ে বকাবকির অভ্যাস গড়ে ওঠে। আবার এখন বাবা-মা বন্ধুভাবাপন্ন হওয়ার কারণে হয়তো সাহস করে সামনেই বাজে কথা বলে ফেলে সন্তানরা। এমনকি এই অভ্যাস বাড়ি থেকে স্কুল পর্যন্ত চলে যায় এবং সবার সঙ্গে তার চর্চা চলতে থাকে।

আধুনিক বাবা-মায়েরা সবচেয়ে বেশি সমস্যা ভোগ করছেন। এমন কি বদলেছে যার কারণে এমন হচ্ছে? বাবা-মায়ের সঙ্গে সন্তানদের সম্পর্ক কি নষ্ট হচ্ছে? মূলত শিশুদের মাঝে কোনো পরিবর্তন আসেনি। তবে অভিভাবকত্বের মধ্যে বেশ বদল হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, আধুনিককালে এমন এক সময় এসেছে যখন সম্পর্কের অনেক দেওয়াল ভেঙে গেছে। বর্তমান যুগে সন্তান ও অভিভাবকের মাঝে এই টানাপড়েনে প্রতিযোগিতা করা অনেকটা পাগলামির মতো। কাজেই বড়দের পক্ষ থেকেই এভানে সাবধান হতে হবে এবং এতে গোটা বিষয়টি থেকে যাবে।

ঝামেলা বেধে গেলে সবচেয়ে কার্যকর উপায়টি হলো, পেছনে ফিরে যাওয়া। অর্থাৎ, কোন বিষয়টি যাবতীয় সমস্যার কারণ তা বাবা-মাকে খুঁজে দেখতে হবে। সন্তানের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডায় জড়িয়ে গেছে এবং সেখানে জোর খাটিয়ে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে গেলে বিপদ আরো বাড়বে। তাই এ ক্ষেত্রে আপনি পিছিয়ে যান।

অনেকেই অভিভাবকত্বের জন্যে পরামর্শকের কাছে যান। তারা এ ক্ষেত্রে ভালো পরামর্শ দিতে পারেন। পরামর্শগুলো উপলব্ধি করতে না পারলে আপনিও অভিভাবক হিসেবে নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারাবেন। এ ক্ষেত্রে সমস্যা আরো বেড়ে যাবে। শিশুদের বোঝাতে হবে। আদর-স্নেহ দিয়ে বোঝালে সহজেই বুঝতে পারে শিশুরা। আপনিও যদি ওদের সঙ্গে রাগ দেখাতে থাকেন, তাহলে আপনাকে প্রতিযোগী মনে করতে পারে তারা। এতে সমস্যা বাড়তেই থাকবে। 
- See more at: http://www.thebengalitimes.com/life-style/2015/07/02/1884#sthash.KAEDGgtK.dpuf

Friday, September 11, 2015

সুস্থ শিশুর জন্য প্রয়োজন ।

 http://secretdiarybd.com/bn/wp-content/uploads/2015/08/poripuok-2.jpg
মায়ের দুধের বিকল্প নেই
শিশুর জন্য মায়ের দুধের বিকল্প নেই। জন্মের পর থেকে ৬ মাস পর্যন্ত মায়ের দুধ ছাড়া অন্য কোনো খাবার শিশুর জন্য প্রয়োজন হয় না। এরপর থেকে বুকের দুধের পাশাপাশি শিশুকে পরিপূরক খাবার খাওয়াতে হবে।
বাড়ন্ত শিশুর খাবার
পড়ন্ত শিশুর বেলায় উন্নত প্রোটিন, আমিষের দিকে গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। প্রতি কেজি ওজনের জন্য ১.৫ থেকে ২ গ্রাম আমিষ দিতে হবে। ডাল, ছোলা, শিমের বিচি, মটর, চিনাবাদাম, ছোট মাছ এ সময় শিশুর জন্য অত্যন্ত উপকারী। হাড়ের বৃদ্ধি এবং হাড় মজবুত করতে শিশুকে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার বেশি খাওয়াতে হবে। শিশুদের খাবারে ঘি, মাখন, চর্বিও থাকতে হবে। বিভিন্ন ধরনের সবজি এবং ছোট মাছ এ সময় থেকেই শিশুকে খেতে অভ্যস্ত করতে হবে। চিপস, চকলেট, কেনা জুস প্রভৃতি শিশুদের যতটা সম্ভব কম খাওয়াতে হবে।
স্কুলের টিফিন
দোকানের ভাজা-পোড়া খাবার, বাসি কেক, পেস্ট্রি, কেনা জুস শিশুর টিফিনের জন্য একেবারেই বর্জন করুন। এর পরিবর্তে টাটকা ফল, বাড়িতে তৈরি স্যান্ডউইচ, পাকোরা, পরোটা ইত্যাদি দিন।


http://www.news.khujenao.com/files/babyer.jpg প্রতিদিন কতবার খাবে
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী ৬ মাস বয়সের পর থেকে ৮ মাস পর্যন্ত একটি শিশুকে দিনে অবশ্যই ২-৩ বা নির্দিষ্ট পরিমাণে খাবার দিতে হবে। আর তাই ৯ থেকে ২৪ মাস বয়স পর্যন্ত শিশুকে দৈনিক ৩-৪ বার বাড়তি খাবার দিতে হবে এবং প্রতিদিন একই সময় খাওয়াতে হবে। পরে শিশুর বৃদ্ধি অনুযায়ী কি পরিমাণ খাবার কয়বার দিতে হবে তা অবশ্যই ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে জেনে নেয়া উচিত।
আদর্শ ওজন
একজন সুস্থ শিশুর ওজন থাকা উচিত ৬ মাস থেকে ১ বছরে ৭ থেকে ১০ কেজি, ২ থেকে ৩ বছরে ১২ থেকে ১৪ কেজি, ৪ থেকে ৫ বছরে ১৬ কেজি থেকে ১৮ কেজি, ৬ থেকে ৭ বছরে ২০ থেকে ২২ কেজি, ৮ থেকে ৯ বছরে ২৫ থেকে ২৬ কেজি, ১০ থেকে ১১ বছরে ৩২ থেকে ৩৫ কেজি। এ ক্ষেত্রে ছেলে শিশু এবং মেয়ে শিশুর ওজনে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। শিশুর ওজন ৮০ শতাংশের কম হলে মোটামুটি অপুষ্টি আর ৬০ শতাংশের কম হলে মারাত্মক অপুষ্টি শিকার বুঝতে হবে।
বডি মাসাজ
খুব ছোট শিশুদের সুস্থ রাখতে মাসাজ অত্যন্ত উপকারী। রক্ত সঞ্চালন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, পরিপূর্ণ ঘুম, ক্ষুধা বৃদ্ধিসহ নানা উপকারিতা রয়েছে শিশুর বডি ম্যাসাজে। তবে শিশুদের ঝাঁঝালো সরিষার তেল দিয়ে ম্যাসাজ করা উচিত নয়। এর বদলে নিয়ম মেনে বাদাম তেল, বেবি বডি ম্যাসাজ জেল দিয়ে আলত করে ম্যাসাজ করুন। খাওয়ার ঠিক আগে বা পরে ম্যাসাজ করা উচিত নয়।
শিশুদের মানসিক বিকাশে
শিশুদের মানসিক বিকাশকেও গুরুত্ব দিন। সবসময় শিশুকে পড়াশোনার জন্য চাপাচাপি না করে অবসর, খেলাধুলার জন্যও কিছ্টুা সময় রাখুন। ছুটির দিনে পরিবারের সবাই মিলে ঘুরে আসুন। শিশুর সঙ্গে সময় কাটান, গল্প কনরুন, পারিবারিক বন্ধন দৃঢ় করুন।
শিশুর খাবারে নতুনত্ব আনুন
অনেক শিশুর খাবারের প্রতি অনীহা থাকে। এ ক্ষেত্রে খাবারে নতুনত্ব আনার চেষ্টা করুন। সবজি, মাছ, ফল ইত্যাদি দিয়ে প্রতিদিন একইভাবে খাবার তৈরি না করে একেক দিন একেক ধরনের খাবার তৈরি করুন।
শিশুদের জন্যও যোগব্যায়াম
বড়দের মতো শিশুকে সুস্থ রাখতেও যোগব্যায়ামের বিকল্প নেই। এমন কিছু যোগ ব্যায়াম রয়েছে, যা শিশুদের সুস্থ রাখার পাশাপাশি পরিপূর্ণ বিকাশে সহায়তা করে। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে শিশুকে অভ্যস্ত করুন যোগব্যায়ামেও।
প্রকৃতির কাছে নিয়ে যান
শিশুকে যত প্রকৃতির কাছে নিয়ে যাবেন ততই শিশুর দৃষ্টি এবং মানসিক বিকাশে তা সহায়ক হবে। মোবাইল ফোন, টেলিভিশনের এ যুগে এটা আরও বেশি দরকারি। অ্যামেরিকান পেডিয়াট্রিকস অ্যাকাডেমির এক গবেষণায় দেখা গেছে শিশুদের অন্তত দু’বছর পর্যন্ত টিভি বা কম্পিউটারের পর্দার সামনে একেবারে নেয়া উচিত নয়।


http://cdn.bn.banglanews24.com/media/files/February_2015/February_20/Mashrafi_325242060.jpg শিক্ষণীয় খেলনা
শিশুকে আর্কিটেকচার, কিউবিক, পাজেল বক্সসহ বিভিন্ন ধরনের শিক্ষণীয় খেলনা কিনে দিন। এসব খেলনা শিশুকে খেলতে খেলতে দ্রুত শিখতে এবং আইকিউ বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।