তিন বছরের শিশু আরিয়া। আরিয়া শান্ত স্বভাবের। কিন্তু মাঝেমধ্যেই হুট করে তার জেদ চেপে যায়। বিশেষ করে, শপিং মলে গিয়ে পছন্দের কোনো খেলনা কিনে না দিলেই এই জেদ আরও চেপে যায়। সবার সামনেই কান্নাকাটি করে এক হুলুস্থুল কাণ্ড বাধিয়ে ফেলে। অগত্যা মেয়েকে শান্ত করার জন্য পছন্দের খেলনাটা কিনে দিতেই হয় মা-বাবাকে।
একই রকম অবস্থা পাঁচ বছরের রাফানের ক্ষেত্রেও। প্রথম শ্রেণিতে পড়ছে রাফান। বন্ধুদের কাছে নিত্যনতুন জিনিস দেখে প্রতিদিনই বিভিন্ন বায়না করে সে। সেই বায়না পূরণ না করা মানেই আরেক হুলুস্থুল ব্যাপার। ঝামেলা এড়াতেই মা-বাবা পূরণ করে দেন প্রতিটি বায়না।
এ রকম সমস্যা শুধু আরিয়া কিংবা রাফানের মা-বাবার ক্ষেত্রেই হচ্ছে না। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, অধিকাংশ শিশুর মা-বাবাই এই সমস্যাটির মধ্য দিয়ে যান। শিশুর হাসি মুখের কথা চিন্তা করেই তাঁরা পূরণ করে দেন প্রতিটি আবদার। কিন্তু কখনো ভেবে দেখেছেন কি যে এর ফলে আপনার শিশুটি একরোখা, জেদি হয়ে যাচ্ছে নাকি? কিংবা বড় হলেও এর কোনো ক্ষতিকর প্রভাব আপনার সন্তানটির মধ্যে পড়বে কি না?
একই রকম অবস্থা পাঁচ বছরের রাফানের ক্ষেত্রেও। প্রথম শ্রেণিতে পড়ছে রাফান। বন্ধুদের কাছে নিত্যনতুন জিনিস দেখে প্রতিদিনই বিভিন্ন বায়না করে সে। সেই বায়না পূরণ না করা মানেই আরেক হুলুস্থুল ব্যাপার। ঝামেলা এড়াতেই মা-বাবা পূরণ করে দেন প্রতিটি বায়না।
এ রকম সমস্যা শুধু আরিয়া কিংবা রাফানের মা-বাবার ক্ষেত্রেই হচ্ছে না। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, অধিকাংশ শিশুর মা-বাবাই এই সমস্যাটির মধ্য দিয়ে যান। শিশুর হাসি মুখের কথা চিন্তা করেই তাঁরা পূরণ করে দেন প্রতিটি আবদার। কিন্তু কখনো ভেবে দেখেছেন কি যে এর ফলে আপনার শিশুটি একরোখা, জেদি হয়ে যাচ্ছে নাকি? কিংবা বড় হলেও এর কোনো ক্ষতিকর প্রভাব আপনার সন্তানটির মধ্যে পড়বে কি না?
শিশুরা কেন জেদ করে?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের কাউন্সেলর মরিয়ম সুলতানা মনে করেন, জেদ কিংবা অতিরিক্ত রাগ শিশুদের একধরনের সহজাত বৈশিষ্ট্য। প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মতো শিশুদেরও বিভিন্ন আবেগ রয়েছে। আর নাজুক মনের ছোট এই মানুষেরা নিজেদের আবেগকে সামলিয়ে উঠতে পারে না। এটাই স্বাভাবিক। আর তাই তাদের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্বটা কিন্তু পরিবারের।
সব শিশুর প্রকৃতি একই রকম নয়। প্রতিটি মানব শিশুই যার যার মতো আলাদা। সাধারণভাবে তিন ধরনের মানসিকতার শিশু দেখা যায়। ‘একরোখা শিশু’, ‘একরোখা ও শান্ত মিশেলের শিশু’ এবং ‘শান্ত ধরনের শিশু’। ১০-১৫ শতাংশ শিশু একরোখা কিংবা ডিফিকাল্ট চাইল্ড ধরনের হয়ে থাকে। আর এ ধরনের শিশুদের জেদ থাকে বড্ড বেশি।
তাই এই খুদে নাজুক মানুষগুলোর জন্যও চাই ঠিকমতো পরিচর্যা। শুধু আবদার পূরণ করা মানেই সঠিক উপায়ে শিশুকে পরিচর্যা করা নয়। কখনো মা-বাবাকে হতে হবে স্নেহশীল আবার কখনো তাঁদের হতে হবে কঠোর। তাই বলে কি শিশুকে শাসনে রাখতে হবে? মোটেই তা নয়। বরং মনোবিজ্ঞানীরা মনে করেন, এমন শাসনের ফলে শিশুর জেদ আরও বেড়ে যেতে পারে। তাহলে কী করা যেতে পারে?
তাই এই খুদে নাজুক মানুষগুলোর জন্যও চাই ঠিকমতো পরিচর্যা। শুধু আবদার পূরণ করা মানেই সঠিক উপায়ে শিশুকে পরিচর্যা করা নয়। কখনো মা-বাবাকে হতে হবে স্নেহশীল আবার কখনো তাঁদের হতে হবে কঠোর। তাই বলে কি শিশুকে শাসনে রাখতে হবে? মোটেই তা নয়। বরং মনোবিজ্ঞানীরা মনে করেন, এমন শাসনের ফলে শিশুর জেদ আরও বেড়ে যেতে পারে। তাহলে কী করা যেতে পারে?
* অতিরিক্ত শাসন কিংবা অতিরিক্ত প্রশ্রয় কোনোটাই ঠিক নয়। পরিবর্তে শিশুকে বুঝিয়ে বলুন। তাকে বোঝাতে পারেন যে সে এখন বড় হচ্ছে এবং এমন আচরণ তার জন্য শোভনীয় নয়। এবং মা-বাবার সামর্থ্যের বাইরে সবকিছু দেওয়া সম্ভব নয়, এটা এখন থেকেই বোঝানো উচিত। এর ফলে বড় হয়ে শিশুর মধ্যে একধরনের দায়িত্বশীলতা তৈরি হবে।
* একরোখা শিশুদের সামলানো একটু কষ্টসাধ্যই বটে। এই ধরনের শিশুদের ক্ষেত্রে কিছু জিনিস উপেক্ষা করে যাওয়াই ভালো। যেমন, শিশু যদি কোনো কথা না শুনে তাহলে তাকে সময় দিন। বারবার একই কথা বললে উল্টো তার মধ্যে সেই কাজটি করার প্রবণতাই বেড়ে যাবে। তাই বারবার একই নির্দেশ না দিয়ে কিছু আচরণ উপেক্ষা করুন।
* শিশুর ভালো কাজের জন্য তার প্রশংসা করুন। শিশু যদি আপনার কথামতো কাজটি করে থাকে তাহলে তাকে অবশ্যই বলুন যে এমন কাজটির জন্য আপনি কতটা খুশি।
* ছোট বয়স থেকেই শিশুকে আদবকায়দা এবং বিভিন্ন নৈতিকতা শিক্ষা দিন। শুধু পড়াশোনার প্রতি নজর রাখার মানেই এই নয় যে শিশুর সব দিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে। ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য তাকে অন্যান্য বিষয়েও শিক্ষা দিন।
* শিশুকে তার সমবয়সী বন্ধুদের সঙ্গে মিশতে দিন। এর ফলে শিশুর সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া ঠিকমতো গড়ে ওঠে।
* শিশু যা বলে সেগুলো মন দিয়ে শুনুন। তাকে কোনোমতেই অবহেলা করবেন না। শিশুরা খুব সংবেদনশীল হয়ে থাকে, আপনার এমন আচরণে তার মনঃক্ষুণ্ন হতে পারে। কথায় কথায় শিশুর আগ্রহ, পড়াশোনা বিষয়ে জেনে নিন। আপনিও আপনার কিছু বিষয় তার সঙ্গে শেয়ার করতে পারেন। যেমন, আপনার নিজের শৈশবের কোনো ঘটনা। কিংবা হতে পারে বাল্যকালের কোনো বন্ধুর কথা। এর ফলে শিশুর যোগাযোগের ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং আপনাদের মাঝে ভালো সম্পর্কও বজায় থাকবে।
* শিশুর শিক্ষক কিংবা মেন্টরের সঙ্গে মাসে একবার হলেও কথা বলুন। এর ফলে আপনার শিশুর সম্পর্কে আপনি জেনে নিতে পারবেন এবং সেই অনুযায়ী তার পরিচর্যাও নিতে পারবেন।
এবার তাহলে শিশুকে নিয়ে দুশ্চিন্তামুক্ত থাকুন!
* শিশুর ভালো কাজের জন্য তার প্রশংসা করুন। শিশু যদি আপনার কথামতো কাজটি করে থাকে তাহলে তাকে অবশ্যই বলুন যে এমন কাজটির জন্য আপনি কতটা খুশি।
* ছোট বয়স থেকেই শিশুকে আদবকায়দা এবং বিভিন্ন নৈতিকতা শিক্ষা দিন। শুধু পড়াশোনার প্রতি নজর রাখার মানেই এই নয় যে শিশুর সব দিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে। ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য তাকে অন্যান্য বিষয়েও শিক্ষা দিন।
* শিশুকে তার সমবয়সী বন্ধুদের সঙ্গে মিশতে দিন। এর ফলে শিশুর সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া ঠিকমতো গড়ে ওঠে।
* শিশু যা বলে সেগুলো মন দিয়ে শুনুন। তাকে কোনোমতেই অবহেলা করবেন না। শিশুরা খুব সংবেদনশীল হয়ে থাকে, আপনার এমন আচরণে তার মনঃক্ষুণ্ন হতে পারে। কথায় কথায় শিশুর আগ্রহ, পড়াশোনা বিষয়ে জেনে নিন। আপনিও আপনার কিছু বিষয় তার সঙ্গে শেয়ার করতে পারেন। যেমন, আপনার নিজের শৈশবের কোনো ঘটনা। কিংবা হতে পারে বাল্যকালের কোনো বন্ধুর কথা। এর ফলে শিশুর যোগাযোগের ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং আপনাদের মাঝে ভালো সম্পর্কও বজায় থাকবে।
* শিশুর শিক্ষক কিংবা মেন্টরের সঙ্গে মাসে একবার হলেও কথা বলুন। এর ফলে আপনার শিশুর সম্পর্কে আপনি জেনে নিতে পারবেন এবং সেই অনুযায়ী তার পরিচর্যাও নিতে পারবেন।
এবার তাহলে শিশুকে নিয়ে দুশ্চিন্তামুক্ত থাকুন!
সুত্র প্রথম আলো নাদিয়া নাহরিন | আপডেট: ০২:০২, আগস্ট ২৪, ২০১৬
0 comments:
Post a Comment